October 15, 2025 ঢাকা, বাংলাদেশ

Blog Post

সংবাদ বার্তা > রাজবাড়ী জেলা > নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারছে না নিভৃত পল্লীর ২৫ ছাত্রী

নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারছে না নিভৃত পল্লীর ২৫ ছাত্রী

রাজবাড়ী সদর উপজেলার খানখানাপুর ইউনিয়নের নিভৃত পল্লীর চর চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৫ জন ছাত্রী অষ্টম শ্রেণি পাশ করেও নবম শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারছে না। যেকারণে তাদের শিক্ষাজীবন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। আসন সংখ্যা সীমিত করে দেওয়া এবং অনলাইন রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক করার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

চর চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শিক্ষানীতির আলোকে ২০১৩ সালে উপজেলার একটি প্রাথমিক স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত উন্নীত করে। প্রত্যন্ত গ্রাম এলাকার বিবেচনায় খানখানাপুর ইউনিয়নের নিভৃত পল্লীর চর চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি এর আওতায় পড়ে। ওই বছর থেকেই বিদ্যালয়টিতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়। অষ্টম শ্রেণিতে পাশ করা ছাত্র-ছাত্রীরা অপেক্ষাকৃত নিকটবর্তী হিসেবে খানখানাপুর তমিজউদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের এবং খানখানাপুর সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউটে ছাত্রদের ভর্তি করা  হয়ে থাকে। যদিও চর চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে এ দুটি বিদ্যালয়ের দূরত্ব ছয় কিলোমিটার। খানখানাপুর এলাকা বা তার আশে পাশে আর কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই।

চর চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আক্কাছ আলী জানান, ২০১৩ সালে তাদের স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান শুরু হয়। অষ্টম শ্রেণি পাশ ছাত্র-ছাত্রীদের তারা খানখানাপুর তমিজউদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ছাত্রীদের এবং খানখানাপুর সুরাজ মোহিনী ইনস্টিটিউটে ভর্তি করতেন। কখনও কোনো সমস্যা হয়নি। এ বছর তাদের স্কুল থেকে ৪৭ জন পাশ করেছে। যাদের ২২ জন ছাত্র এবং ২৫ জন ছাত্রী। ২২জন ছাত্রকে সুরাজমোহিনী ইনস্টিটিউটে ভর্তি করাতে পারলেও ছাত্রীদের তমিজউদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি করাতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে তমিজউদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেছেন। কিন্তু আসন সংখ্যা না থাকায় এবং অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন না করার অজুহাতে তিনি ভর্তি নেননি। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি তিনি জানিয়েছেন। ২৫ জন ছাত্রীর ভর্তি নিয়ে তিনি খুবই সমস্যায় পড়েছেন। তিনি আরও জানান, চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে খানখানাপুর তমিজউদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের দূরত্ব ছয় কিলোমিটার। এর কাছাকাছি আর কোনো মাধ্যমিক বিদ্যালয় নেই। যেখানে গিয়ে ছাত্রীরা ভর্তি হতে পারে। তার স্কুলে যারা লেখাপড়া করে তারা অতিশয় দরিদ্র শ্রেণির। অনেক কষ্টে তাদের অভিভাবকদের বুঝিয়ে পড়াশোনা করিয়েছেন। এই ছাত্রীরা ভর্তি হতে না পারলে ঝরে পড়বে বলে তিনি আশঙ্কা করেন তিনি।

খানখানাপুর তমিজউদ্দিন খান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহম্মদ সফিউল্লাহ জানান, আগে অনলাইন ছিলনা। যেকারণে ভর্তি নিতে কোনো অসুবিধা ছিল না। আসন সংখ্যার বিপরীতে বেশি ছাত্রী ভর্তির সুযোগ ছিল। ২০২৩ সালে তার স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে ২৫৪ জন রেজিস্ট্রিশেনকৃত ছাত্রী ছিল। যাদের ২৪৪ জন নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছে। তার স্কুলে চারটি শাখায় আসন সংখ্যা ২২০ জন। যেহেতু ২৪৪ জন তাদের স্কুলের ছাত্রী তাই তাদের সমস্যা হবেনা। নতুন করে কাউকে ভর্তি করলে তাদের অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করতে সমস্যা হবে। রেজিস্ট্রেশন না হলে তো তার নিজেকেই বিপাকে পড়তে হবে।

রাজবাড়ী সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মধুসুদন সাহা জানান, সরকারিভাবে অনলাইন ভর্তি কার্যক্রম শুরু হয়েছে। কোন স্কুলে কতজন ভর্তি হতে পারবে তা নির্ধারণ করে ্েদওয়া আছে। আমরা সরকারের পরবর্তী সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। যারা ভর্তি হতে পারছে না সেই তথ্যগুলো ঢাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন। আগামী ২৯ জানুয়ারি জেলা প্রশাসকের সাথে এবিষয়ে সভা রয়েছে। সে সভায় একটা সুরাহা হতে পারে।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *