
নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে মেঘনায় প্রকাশ্যে ইলিশ শিকার
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের মধ্যেই প্রকাশ্যে চলছে ইলিশ শিকার। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন নদীতে জাল ফেলছেন জেলেরা। নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির একেবারে পাশেই এমন দৃশ্য দেখা গেলেও নেই কোনো দৃশ্যমান অভিযান বা আইনি ব্যবস্থা।
নিজস্ব প্রতিবেদক 2025-10-15
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা নদীতে মা ইলিশ সংরক্ষণ অভিযানের মধ্যেই প্রকাশ্যে চলছে ইলিশ শিকার। প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে প্রতিদিন নদীতে জাল ফেলছেন জেলেরা। নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির একেবারে পাশেই এমন দৃশ্য দেখা গেলেও নেই কোনো দৃশ্যমান অভিযান বা আইনি ব্যবস্থা।
গত ৪ অক্টোবর থেকে ২৫ অক্টোবর পর্যন্ত মা ইলিশ সংরক্ষণে চাঁদপুর জেলার ষাটনল থেকে হাইমচরের চরভৈরবী পর্যন্ত ৭০ কিলোমিটার নদী এলাকায় সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ করেছে মৎস্য অধিদপ্তর। এর মধ্যে মতলব উত্তরের ষাটনল থেকে আমিরাবাদ পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার নদীতে এ নিষেধাজ্ঞা কার্যকর থাকার কথা।
কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে ভিন্ন চিত্র। বুধবার (১৫ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৫০ মিনিটে সরেজমিনে মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির পাশের ঘাটে দেখা যায়, একাধিক নৌকায় জেলেরা জাল প্রস্তুত করছেন। তারা কোনো ধরনের ভয় বা লুকোচুরি ছাড়াই প্রকাশ্যে ইলিশ ধরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ছবি তুলতে গেলে তারা বলেন, “ছবি তুলেন যত খুশি, ছবি তুলে কী হবে? সব লাইনঘাট গুছানো আছে।”
এ সময় মোহনপুর পর্যটন কেন্দ্র সংলগ্ন নদীতে দুই কিশোরকেও মাছ ধরতে দেখা যায়। এছাড়াও দশানী ও ছটাকি এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বেশ কিছু নৌকা ইতিমধ্যেই নদীতে জাল ফেলছে।
সবচেয়ে বিস্ময়ের বিষয়, মোহনপুর নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির স্পিডবোট ঘাটের একেবারে পাশেই এই কার্যক্রম চললেও কোনো বাধা বা অভিযান দেখা যায়নি।
ফাঁড়ির ইনচার্জ মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি, ফলে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।
এ প্রসঙ্গে মতলব উত্তর উপজেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি মতিউর রহমান চৌধুরী বলেন, “নিষেধাজ্ঞার সময় প্রকাশ্যে জেলেদের নদীতে নামা অত্যন্ত দুঃখজনক। এটি প্রশাসনের নজরদারির চরম ঘাটতি।”
তবে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিজয় কুমার দাসের মন্তব্যে আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, “অনেক সময় আমরা অভিযান থেকে ফেরার পথে মাঝনদীতে জেলেদের মাছ ধরতে দেখি। এটা স্বাভাবিক। সবাই তো জীবিকা চালায়।”
স্থানীয় সচেতন মহল বলছেন, মা ইলিশ সংরক্ষণে প্রশাসনের উদাসীনতা ও মাঠ পর্যায়ে দায়সারাভাবে দায়িত্ব পালনের কারণেই এই অভিযান কার্যত অকার্যকর হয়ে পড়েছে। এর ফলে নদীতে এখনো চলছে নির্বিঘ্নে ইলিশ শিকার, যা ভবিষ্যতে ইলিশের প্রজনন ও উৎপাদনের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে।
বাংলাদেশ জার্নাল/এনএম